বিটকয়েনের শুরু থেকে ২০২২ সালের শেষ দিকের “ক্রিপ্টো উইন্টার” পর্যন্ত প্রতিনিয়ত একটি প্রশ্ন সামনে এসেছে: কেউ কি ক্রিপ্টো বোঝেন?
ক্রিপ্টো নিয়ে এক দশকেরও বেশি সময় ধরে কাজ করা সাংবাদিকেরাও এমন কিছু গুরুতর ভুল করেছেন, যা চাইলেই এড়ানো যেত।অনেকেই এর অনেক রকম ব্যাখ্যা দিয়েছে: সিএনএন ও ফোর্বসসহ বিভিন্ন গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠান “ক্রিপ্টো ১০১” লাইব্রেরির বিভিন্ন সংস্করণ বের করেছে। এসব রিসোর্স সংকলন করা হয়েছে যেন সম্ভাব্য বিনিয়োগকারীরা এই খাতকে আরও ভালভাবে বুঝতে পারে৷ ক্রিপ্টো কোম্পানি ও বিনান্স থেকে ক্রাকেন পর্যন্ত (আপাতদৃষ্টিতে স্বচ্ছল) বিভিন্ন ক্রিপ্টো এক্সচেঞ্জগুলো একই কাজ করে।
এই নিবন্ধের জন্য আমি সাংবাদিক ম্যাট লেভিনের সাক্ষাৎকার নিয়েছি। তিনি ২০২২ সালের অক্টোবরে ক্রিপ্টো নিয়ে ব্লুমবার্গ বিজনেসউইকের একটি পুরো সংখ্যা তৈরির বিরল সুযোগ পেয়েছিলেন। প্রতিটি ক্রিপ্টো রিপোর্টারের এটি পড়া উচিত।
তবুও, শিল্পখাতের সংগঠন ক্রিপ্টোলিটারেসির তৈরি করা মার্কেটিং টুল, ক্রিপ্টো লিটারেসি সার্ভে অনুসারে, ৯১% মানুষ ক্রিপ্টোর মৌলিক বিষয়গুলোই বোঝে না।
এমনকি ক্রিপ্টো প্রযুক্তি ও অর্থনীতি নিয়ে ভালো ধারণা আছে বলে যে সাংবাদিকেরা বিশ্বাস করেন, তাঁদের জন্যও এই বিট নিয়ে কাজ করা নিঃসন্দেহে কঠিন। এক দশকেরও বেশি সময় ধরে বিষয়টি নিয়ে যত নিবন্ধ, ভিডিও ও পডকাস্ট বেরিয়েছে সেগুলোর দিকে ফিরে তাকানোর পরে মনে হলো, এই খাত নিয়ে সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে যা শিখেছি সেগুলো তুলে ধরার এখনই উপযুক্ত সময়।
দ্য পিকলবল অব ফাইন্যান্স: হার্ড-লার্নট লেসনস ইন কভারিং ক্রিপ্টো শীর্ষক নিবন্ধে আমি নয়টি পাঠের একটি রূপরেখা তুলে ধরেছি, যা আপনি চাইলে ডাউনলোডও করতে পারেন। আমাদের কাজে যে শিক্ষাটি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বলে আমি মনে করি, তা এখানে সংক্ষিপ্তভাবে তুলে ধরেছি: আরও প্রশ্ন করুন।
ভুল এড়িয়ে চলুন
ক্রিপ্টো নিয়ে এক দশকেরও বেশি সময় ধরে কাজ করা সাংবাদিকেরাও এমন কিছু গুরুতর ভুল করেছেন, যা চাইলেই এড়ানো যেত। আমি যে একাধিক সোর্সের সঙ্গে কথা বলেছি, তাদের হতাশা হলো, সাংবাদিকেরা তাদের নিবন্ধে বিশদ বিবরণ তুলে ধরতে পারেননি। ফলে ক্রিপ্টো নিয়ে সব মূলধারার গণমাধ্যমের কাজে এক ধরনের অনাস্থা তৈরি হয়েছে।
তথাকথিত “স্টেবলকয়েন”-এর প্রচারণা চালানো কোম্পানিগুলোর ব্যালেন্স শিট – তা সে যেমনই হোক – খতিয়ে দেখা জরুরি।কয়েনডেস্কের প্রতিবেদক স্যাম রেনল্ডস যেমনটি বলেছেন, “কারো কাছে ক্রিপ্টোর বাইবেল নেই, ঠিক না? আমরা সবাই শিখছি।” এ কারণে কি ক্রিপ্টো নিয়ে কাজ করা কঠিন হয়ে গেছে? অবশ্যই। তবে ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়া লস অ্যাঞ্জেলসের কিংবদন্তি বাস্কেটবল কোচ জন উডেন একবার বলেছিলেন, “আপনার হাতে যদি সঠিকভাবে কাজ করার মতো পর্যাপ্ত সময় না থাকে, তাহলে কাজটি শেষ করার সময় আর কখন পাবেন?”
ক্রিপ্টো নিয়ে এই কাজের সবচেয়ে আলোচিত উদাহরণের সঙ্গে হয়ত নিউ ইয়র্ক টাইমসের নাম জড়িয়ে থাকবে। ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে, তারা মে বি দেয়ার ইজ আ ইউজ কেস ফর ক্রিপ্টো আফটার অল শিরোনামে কেভিন রুজের এই লেখা প্রকাশ করে।
লেখাটি ছিল হিলিয়াম নামের একটি কোম্পানি নিয়ে যারা “ক্রিপ্টোকারেন্সি পরিচালিত ওয়্যারলেস নেটওয়ার্ক” হিসেবে আলোচনায় এসেছিল। এতে রুজ লেখেন, “যে কেউ হিলিয়াম নেটওয়ার্ক ব্যবহার করতে পারেন, যদিও এখন পর্যন্ত তাদের বেশিরভাগ ব্যবহারকারী লাইমের মতো প্রতিষ্ঠান (যারা তাদের স্কুটারগুলোতে নজর রাখতে হিলিয়াম ব্যবহার করেছে)।”
হিলিয়াম কীভাবে লাইমের সঙ্গে তাদের সম্পর্ক নিয়ে মিথ্যা বলেছিল বা বিকৃত করেছিল, তা নিয়ে পাঁচ মাস পর ম্যাশেবল একটি নিবন্ধ প্রকাশ করে।
সংবাদ সাইট ম্যাশেবলের লেখা বেরুনোর পর, হিলিয়াম তাদের হোমপেজ থেকে লাইম ও সেলসফোর্স উভয়ের লোগো সরিয়ে নেয়। অথচ, আমি যখন এই লেখা লিখছি, তখন পর্যন্ত টাইমসের সাইটে সেই নিবন্ধটি বহাল তবিয়তে টিকে ছিল। তাতে কেবল ছোট একটি আপডেট যুক্ত করা হয়েছে এই বলে যে, “এই নিবন্ধ প্রকাশিত হওয়ার কয়েক মাস পর হিলিয়ামের কিছু অংশীদারিত্ব নিয়ে ক্রিপ্টো সংশয়বাদীরা প্রশ্ন তুলেছেন। তাদের দাবি হলো, যে কোম্পানিগুলোর সঙ্গে কোন আনুষ্ঠানিক চুক্তি নেই, কোম্পানিটি তাদের সঙ্গে সম্পৃক্ততার দাবি করেছে৷ লাইমের মুখপাত্র একটি ইমেইলে বলেছেন, ‘২০১৯ সালে তাদের পণ্যের প্রাথমিক যাচাই বাছাইয়ের বাইরে, লাইমের সঙ্গে হিলিয়ামের কোনো সম্পর্ক ছিল না আর বর্তমানেও নেই।’”
ব্যালেন্স শিট
“আপনার কোম্পানির ব্যালেন্স শিটে কী আছে?” কয়েনডেস্কের সাংবাদিক ইয়ান অ্যালিসনের জানতে চাওয়া এমন সহজ প্রশ্ন এক সময়ের শক্তিশালী কোম্পানি এফটিএক্স নিয়ে সাড়াজাগানো উন্মোচনের পথ তৈরি করে। অ্যালিসনের প্রতিবেদনে বেরিয়ে আসে, এফটিএক্সের সহযোগী কোম্পানি আলামেডা রিসার্চের তারল্য এমন একটি এফটিএক্স টোকেনের ওপর নির্ভরশীল যার কোনো পৃষ্ঠপোষক নেই।
(ধারণা করা হয়, অ্যালিসন যে এফটিএক্স কিনেছেন এবং পরবর্তীতে সেটির ব্যালেন্স শিট প্রকাশ করেছেন এর সঙ্গে এফটিএক্সের মূল মালিকানা প্রতিষ্ঠান ডিজিটাল কারেন্সি গ্রুপের ব্যবসায়িক বিবেচনা জড়িত ছিল। গ্রুপটির মালিকানাধীন আরেকটি প্রতিষ্ঠান হলো, এফটিএক্সের প্রতিদ্বন্দ্বী এক্সচেঞ্জ প্রতিষ্ঠান জেনেসিস এবং এটি তাদের জন্য ভয়াবহ বিপর্যয়ের কারণ হতে পারত।)
কোম্পানি গঠন কাঠামো ও নিবন্ধনের দেশে ভিন্নতার কারণে অধিকাংশ ক্রিপ্টো কোম্পানির রিপোর্টিং স্ট্যান্ডার্ডে পার্থক্য রয়েছে, যা অন্যান্য শিল্পের ক্ষেত্রে দেখা যায় না। এ কারণে তারা তাদের সম্পদ নিয়ে এদিক-ওদিক করতে পারে, যেমনটা বলা হয়েছে ২০২১ সালের ডেলয়েট রিপোর্টে।
তথাকথিত “স্টেবলকয়েন” প্রচারণা চালানো কোম্পানিগুলোর ব্যালেন্স শিট – তা সে যেমনই হোক – খতিয়ে দেখা জরুরি। এই ডিজিটাল টোকেনগুলো মার্কিন ডলার বা সোনার মতো রেফারেন্স সম্পদের মূল্য নির্ধারণ করে। লেনদেন আরও সহজ করার উদ্দেশ্যে এগুলো করা হয়েছে। তাই তারা ক্রিপ্টো অর্থনীতির একটি বড় অংশের ভিত্তি তৈরি করে।
২০২১ সালের শরতে ব্লুমবার্গ বিচক্ষণতার সঙ্গে স্টেবলকয়েন কোম্পানি টিথারের দাবিগুলো নিয়ে অনুসন্ধান করেছে। প্রশ্নগুলো এখনো প্রাসঙ্গিক।
ক্রিপ্টো কী বিদ্যমান ব্যবস্থার চেয়ে ভাল?
মুদ্রার উল্টো পিঠে, বিবেচনাপ্রসূত কিছু প্রশ্ন, ক্রিপ্টো কভারেজের ক্ষেত্রে আরো অনুসন্ধানের পথ দেখিয়েছে। ক্রিপ্টোর ধোঁয়াশা কাটাতে নির্ভরযোগ্য একটি প্রশ্ন হলো “বিদ্যমান ব্যবস্থার চেয়ে ক্রিপ্টো কী ভাল করতে পারে?”
কার্টুন অ্যাভাটারস পডকাস্টের একটি পর্বে এঞ্জেল ইনভেস্টর জ্যাক ওয়েইনবার্গ এই বিষয়ে প্রশ্ন করেছিলেন ওয়েবথ্রি “বিনিয়োগকারী” প্যাকি ম্যাককর্মিককে। এটি ব্লকচেইন মর্টগেজগুলো কীভাবে কাজ করতে পারে, সেটি ব্যাখ্যা করার একটি অপচেষ্টাকে সামনে এনেছিল৷
ফ্রিকোনোমিক্স রেডিও পডকাস্টের একটি পর্বে লেখক স্টিফেন ডাবনার ওয়েবথ্রি এর “বিনিয়োগকারী” আরিয়ানা সিম্পসনের কাছে একই কথা জানতে চেয়েছিলেন। এর প্রতিক্রিয়ায় তার উত্তর ছিল: “সত্যি? ব্লকচেইনের এই অসাধারণ ভবিষ্যতের জন্যই কি আমরা সবাই অপেক্ষা করছিলাম?”
ক্রিপ্টো কমিউনিটির সঙ্গে ট্রোলিং গভীরভাবে জড়িয়ে রয়েছে, কারণ ইন্টারনেটে ক্রিপ্টো অবিচ্ছেদ্যভাবে যুক্ত, যেখানে বিড়ম্বনা ও ট্রোলিং প্রচলিত ভাষা হয়ে উঠেছে।ক্রিপ্টো ইন্ডাস্ট্রির বেশিরভাগ ব্যাখ্যা টেক ইউটোপিয়ানিজম নির্ভর, বিশেষ করে একটি ধারণা প্রচলিত আছে যে ক্রিপ্টো ও ব্লকচেইন প্রযুক্তি বিশ্বব্যাপী আমাদের অনেকগুলো দিককে কোনো না কোনোভাবে আরও ভালো, দ্রুত, কম কেন্দ্রীভূত এবং/অথবা আরও সুরক্ষিত করে তুলবে। এই প্রতিশ্রুত অগ্রগতিগুলো এখনও না হয়ে থাকলে প্রশ্ন করা উচিত: কেন হয়নি? অথবা, যদি হয়ে থাকে, তবে কি সেটি অসংখ্য সাধারণ বিনিয়োগকারীকে ক্ষতির মুখে না ফেলে করা যেত?
ট্রলিং
নিয়ন্ত্রণের ঘাটতি ছাড়াও ক্রিপ্টো পরিসরের সব কিছু নিয়ে দৃঢ়ভাবে প্রশ্ন করার আরেকটি অপরিহার্য কারণ হলো “ক্রিপ্টো ব্রোস” নামের উপদলগুলোর মধ্যে ট্রলিংয়ের সংস্কৃতি ব্যাপকভাবে বিদ্যমান।
এই প্রকল্পে আমার কাজ চলাকালে একজন ব্যক্তির সঙ্গে আমাকে পরিচয় করিয়ে দেয়া হয়, যিনি ক্রিপ্টো ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করেন এবং সক্রিয়, বেনামী টুইটার অ্যাকাউন্ট চালান। তিনি কর্তৃপক্ষকে সহযোগিতা করতে রাজি হওয়ার আগে জালিয়াতির দায়ে ১১০ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড পেয়েছেন। এই লোক বড়াই করে বলতেন যে তিনি ফোর্বসের এক সাংবাদিককে মিথ্যা বলেছেন, যিনি এফটিএক্সের সহযোগী প্রতিষ্ঠান আলামেডা রিসার্চের প্রধান ক্যারোলিন এলিসনকে নিয়ে লেখালেখি করেছেন।
এই সোর্স বলেছেন, তারা এলিসন সম্পর্কে বেশ কিছু মিথ্যা ছড়ান যা ফোর্বসের সাংবাদিক তার সর্বশেষ লেখায় তুলে ধরেন। “আমি পুরোটা সময় জুড়ে এই সাংবাদিককে ট্রল করেছি, কারণ ফোর্বসের ভয়ঙ্কর রূপ নেওয়ার কুখ্যাতি রয়েছে।”
ক্রিপ্টো কমিউনিটির সঙ্গে ট্রোলিং গভীরভাবে জড়িয়ে রয়েছে, কারণ ইন্টারনেটে ক্রিপ্টো অবিচ্ছেদ্যভাবে যুক্ত, যেখানে বিড়ম্বনা ও ট্রোলিং প্রচলিত ভাষা হয়ে উঠেছে। আর অন্তত আংশিকভাবে হলেও ক্রিপ্টো তৈরি হয়েছিল কর্তৃত্বের প্রতি অবিশ্বাস থেকে। ক্রিপ্টোল্যান্ডের কেউ কেউ সাংবাদিকদেরকে কর্তৃত্বের বিচারক হিসেবে বিবেচনা করেন।
আমি যে সোর্সের সঙ্গে কথা বলেছিলাম তিনি সাংবাদিকতাকে “অত্যন্ত রাজনৈতিকভাবে অনুপ্রাণিত সরকারের চতুর্থ শাখা” বলে অভিহিত করেছেন আর বলেছেন, সাংবাদিকতার নীতিগুলো ক্রিপ্টোর মূল নীতিমালার বিরুদ্ধে যায়। তাঁর মতে, ক্রিপ্টোর মূলনীতি “স্ব-সার্বভৌমত্ব,” “প্রথাবিরোধী মূল্যবোধ ধারণ,” ও “মূলস্রোতের বাইরে চলা।”
সোর্সের সঙ্গে আমার প্রথম সাক্ষাৎকারের কিছু সময় পর ফোর্বসের স্টোরিটি একটি সংশোধন সহ হালনাগাদ করা হয়েছিল যার একটি অংশ ছিল অনেকটা এমন: “এই স্টোরির আগের সংস্করণের বিশদ বিবরণে বলা হয়েছিল যে এলিসনের কিছু বিকল্প-ডানপন্থী সমর্থক তাঁকে ‘রাণী ক্যারোলিন’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। যে সূত্র এই বিবরণ নিশ্চিত করেছেন, এখন তিনিই সেগুলো মিথ্যা বলে দাবি করছেন। স্টোরি থেকে সেগুলো বাদ দেওয়া হয়েছে আর শিরোনাম হালনাগাদ করা হয়েছে।”
ফোর্বস যেভাবে সংশোধনটি সামলেছে, তা নিয়ে এই সূত্র ততটা খুশি ছিলেন না। তিনি জানিয়েছেন, “শিরোনাম বদলে ফেললেন, আর অনেক বড় কিছু হয়ে গেল, তাই না? আমার মতে, নিজের ভুল বুঝতে পারা মন্দ না, ব্যাপারটি অনেকটা এমন যে, ‘এই যে, আমরা আমাদের রিপোর্টিং চর্চা খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখছি।’”
একেবারে হারিয়ে যাচ্ছে না
এই লেখাটি তৈরির সময় আমার কথোপকথন থেকে একটি বিষয় পরিষ্কার ছিল: ক্রিপ্টো হারিয়ে যাচ্ছে না।
ডিক্রিপ্টের প্রধান সম্পাদক ড্যান রবার্টস যেমনটি বলেছেন: “হাজার হাজার শিটকয়েন রয়েছে যা হয়ত ব্যর্থ হবে আর হারিয়ে যাবে। তবে আমি সবাইকে বলতে চাই, বিটকয়েন ও ইথেরিয়াম এখন থেকে অন্তত আরও ১০ বছর টিকে থাকবে। আমি দৃঢ়ভাবে তা বিশ্বাস করি।”
এই খাতের আরও অনেকের মতো রবার্টসও মনে করেন, ক্রিপ্টো মার্কেটের সর্বশেষ দরপতন ক্রমবর্ধমান সংকটের নমুনা মাত্র। তিনি আমাকে বলেছেন, “এগুলো একটার পর একটা ঢেউয়ের মত আসে। মানুষ যে ভুলটি করে তা হলো উপসংহারে উপনীত হওয়া যে ক্রিপ্টোর দরপতন মানে ইন্ডাস্ট্রিটি শেষ। কতবার যে মানুষ ক্রিপ্টোকে মৃত ঘোষণা করেছে? এটি একটা পাঞ্চলাইন হয়ে দাঁড়িয়েছে।”
ক্রিপ্টো টিকে থাকলে এই ইন্ডাস্ট্রির পরিপক্কতার সঙ্গে সঙ্গে একে ঘিরে থাকা অর্থনীতি ও প্রযুক্তিও হয়ত বদলে যাবে। তাই কোনটি বাড়াবাড়ি বা অবমূল্যায়িত, আসল বা নকল তা বুঝতে সাংবাদিকদের নিবিড়ভাবে পড়ালেখার প্রয়োজন পড়বে।
সহযোগিতামূলক সংস্থা গড়ে তোলা এবং ভবিষ্যতে ক্রিপ্টো নিয়ে কাজ করার সবচেয়ে ভালো চর্চা প্রতিষ্ঠায় ইতিমধ্যেই সাংবাদিকদের সংগঠনগুলো মিলিত হচ্ছে। ২০২০ সালে আরও ভাল ক্রিপ্টো কভারেজ বাড়ানোর লক্ষ্যে অ্যাসোসিয়েশন অব ক্রিপ্টোকারেন্সি জার্নালিস্ট অ্যান্ড রিসার্চার্স প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। কয়েনডেস্কের রেনল্ডস বর্তমানে এর ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে কর্মরত আছেন।
প্রোটোস ও পডকাস্ট আয়োজন ক্রিপ্টো ক্রিটিকস কর্নারের ক্রিপ্টো সাংবাদিক ক্যাস পিয়ান্সি সম্প্রতি এসিজেআর প্যানেলের বক্তব্যে বলেছেন, তিনি ইন্টারন্যাশনাল কনসোর্টিয়াম অব ইনভেস্টিগেটিভ জার্নালিস্টের মতো একটি নতুন ক্রিপ্টো সংস্থা দেখতে চান যেখানে “আপনি একনিষ্ঠ সাংবাদিকদের দেখা পাবেন, এবং গোটা বিশ্ব খুঁজে কিছু পাওয়ার জন্য নির্দিষ্ট বিষয়ে বিশেষায়িত জ্ঞানের নাগাল পাবেন, এবং যা এই স্টোরিগুলোর জন্য নির্দিষ্ট দক্ষতা অর্জনে সবাইকে সাহায্য করবে।”
এমন মডেল ব্যবহার করে ক্রিপ্টো সাংবাদিকেরা যৌথভাবে বড় ধরনের কাজের সক্ষমতা অর্জন করবে বর্তমানে যা করার মত সময় বা অর্থ তাদের হাতে নেই।
পোস্টটি প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল রয়টার্স ইনস্টিটিউটের ওয়েবসাইটে। অনুমতি নিয়ে এখানে পুনরায় প্রকাশ করা হলো।
আরও পড়ুন
ক্রিপ্টোকারেন্সি অনুসন্ধানের টিপস
ক্রিপ্টোকারেন্সির মাধ্যমে জঙ্গি অর্থায়ন ট্র্যাকিং করবেন যেভাবে
১০ টিপস ফর ট্র্যাকিং রাশিয়ান-ওউনড অ্যাসেটস
ব্রেট আরেস্কো সম্প্রতি কলম্বিয়া জার্নালিজম স্কুল থেকে অনার্স নিয়ে স্নাতক সম্পন্ন করেছেন। এখানে তিনি কোভিড-১৯ মহামারী চলাকালীন নিউইয়র্ক সিটিতে ভোটদানের কেন্দ্রগুলো সুরক্ষিত রাখার অসুবিধা থেকে শুরু করে কর্পোরেট স্বচ্ছতা আইন পাস করতে কংগ্রেসের ১২ বছরের লড়াই পর্যন্ত সবকিছু নিয়েই কাজ করেছেন।
The post ক্রিপ্টোকারেন্সি নিয়ে অনুসন্ধানে সাংবাদিকের যেসব প্রশ্ন করা উচিত appeared first on Global Investigative Journalism Network.