সেন্সরশিপ এড়াতে ইন্টারনেটে যেভাবে বেনামে বিচরণ করবেন

1 year ago 72

English

avoiding internet censorship anonymous

ছবি: শাটারস্টক

ইন্টারনেট সেন্সরশিপ ও নিয়ন্ত্রণে সরকারগুলো যেসব পদ্ধতি ও টুল ব্যবহার করে তা প্রতিনিয়ত পরিবর্তন হচ্ছে; একইভাবে বদলাচ্ছে সেন্সরশিপ ও ট্র্যাকিং এড়ানোর কৌশলও। তবে ভিপিএন ও প্রাইভেসি-কেন্দ্রিক সার্চ ইঞ্জিনসহ সবসময় ব্যবহারযোগ্য কিছু উত্তম চর্চা ও সফটওয়্যার রয়েছে, যেগুলো জেনে রাখা ভালো। ফ্যাবিয়ান শ্মিটের লেখা এই নিবন্ধটি ডয়চে ভেলেতে প্রথম প্রকাশিত হয়, এবং অনুমতি নিয়ে এখানে পুনরায় প্রকাশ করা হলো।

স্বৈরতান্ত্রিক সরকার ও অনলাইন সেবা সংস্থাগুলো সব ধরনের ডেটা সংগ্রহ করে। মুক্ত নেটওয়ার্কে অনেক ব্যবহারকারীর অ্যাক্সেস থাকে না। তাই জেনে রাখা ভালো, কীভাবে নিরাপদে ও বেনামে ইন্টারনেটে বিচরণ করবেন এবং সেন্সরশিপ এড়িয়ে চলবেন। এ বিষয়ে নিচে কয়েকটি পরামর্শ দেওয়া হলো৷

বর্তমান সময়ে সেন্সরশিপ কর্তৃপক্ষ অনেক বেশি সজাগ। তারা স্ট্যাটিক প্রক্সিগুলোকে আগের চেয়ে দ্রুত ব্লক করে দেয়।

ইন্টারনেটে অন্যরা আমাকে কীভাবে দেখতে পায়?

মূলত, যে সার্ভারের মাধ্যমে ট্রাফিক প্রবাহিত হয়, সেই সার্ভারে যাদের অ্যাক্সেস আছে তারা প্রত্যেকে সব ইন্টারনেট ট্র্যাফিক দেখতে পারে — ঠিক যেমন যে কোনো বার্তা বাহক একটি পোস্টকার্ড পড়তে পারে। অনেক ডেটা আপনার পরিচয় প্রকাশ করতে পারে। যেমন, আপনার কম্পিউটারের আইপি অ্যাড্রেস। তবে আজকাল কম্পিউটারের অন্যান্য ডেটা দিয়েও ব্যবহারকারীদের চেনা যায়: ব্রাউজার প্লাগইনের স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য, স্ক্রিন রেজ্যুলিউশন, উইন্ডো সাইজ, ভাষা, সময়। এভাবে একজন ব্যবহারকারীর অত্যন্ত সুনির্দিষ্ট পরিচিতি দাঁড় করানো যায়, যা দিয়ে যে কাউকে যে কোনো ওয়েব সার্ভারে ৯৮% পর্যন্ত শনাক্ত করা সম্ভব, এমনকি আইপি অ্যাড্রেস ছাড়াই।

নির্দিষ্ট ওয়েবসাইট ব্লক করে দিলে সেটি কীভাবে দেখব?

আগে কেবল স্ট্যাটিক প্রক্সি ব্যবহার করা হতো। অনেক সময় এটি ছিল কেবল সাধারণ আইপি অ্যাড্রেস যা ইন্টারনেট ট্র্যাফিক ফরোয়ার্ড করত। যতক্ষণ সেন্সরশিপ কর্তৃপক্ষ প্রক্সিগুলো খেয়াল করে না বা জানে না, ততক্ষণ এটি কাজ করত। তবে ইতিমধ্যে অনেক রাষ্ট্র তাদের অপছন্দের প্রক্সিগুলো ব্লক করতে শুরু করেছে। কোথা থেকে ভিজিট আসছে, ওয়েবসাইটের অপারেটরদের কাছে তা আড়াল করতেও প্রক্সি ব্যবহার করা যেতে পারে ৷ এজন্য আপনি অ্যানোনিমাউস বা এ ধরনের বেনামী সেবার মাধ্যমে বিকল্প রুট ব্যবহার করতে পারেন।

কীভাবে একটি টানেল নির্মাণ করতে পারি?

ভার্চুয়াল প্রাইভেট নেটওয়ার্ক (ভিপিএন) কিছুটা জটিল। এগুলো ব্যবহার করতে আপনি কোনো সার্ভারে একটি এনক্রিপ্টেড টানেল সংযোগ স্থাপন করেন, যেমন অন্য কোনো দেশ৷ কেউ টানেলটি খতিয়ে দেখতে পারে না। ভিপিএন দিয়ে কোম্পানিগুলো তাদের কর্মী ও প্রতিষ্ঠানের অভ্যন্তরীণ নেটওয়ার্কের মধ্যে একটি নিরাপদ সংযোগ স্থাপনের মতো কাজ করে।

সেন্সরশিপ আক্রান্ত অঞ্চলে মুক্ত ইন্টারনেট সুবিধা পেতেও টানেলটি ব্যবহার করা যায়। তবে এটি যে একটি ভিপিএন সংযোগ এবং কারা এটি পরিচালনা করছে, সেন্সরশিপ কর্তৃপক্ষ তা দেখতে পারে। বর্তমান সময়ে সেন্সরশিপ কর্তৃপক্ষ অনেক বেশি সজাগ। তারা স্ট্যাটিক প্রক্সিগুলোকে আগের চেয়ে দ্রুত ব্লক করে দেয়। তাছাড়া, প্রক্সিগুলো বেনামী কাজের জন্যও সুবিধাজনক নয়। ভিপিএন নেটওয়ার্কগুলোও অনেক সময় নিষিদ্ধ থাকে। তাই আপনাকে নতুন কিছু ব্যবহার করতে হবে, যেমন টর নেটওয়ার্ক।

টর কী?

Tor project internet anonymous avoid censorship

ছবি: স্ক্রিনশট, টর প্রজেক্ট

টর মানে “অনিয়ন রাউটার।” এটি অনেকটা পেঁয়াজের মতো পরতের পর পরত দিয়ে তৈরি। টর আপনার পরিচয় গোপন রাখতে সাহায্য করে। আপনি যে সার্ভার থেকে সবচেয়ে সংক্ষিপ্ত রুটে তথ্য পুনরুদ্ধার করতে চান, সেটির সঙ্গে আপনি সরাসরি যুক্ত নন। বরং টর তথাকথিত টর নোড নামের বিকল্প রুট দিয়ে আপনাকে সংযুক্ত করে। এই টর নোডগুলো প্রতিটি ব্রাউজারের আচরণের ওপর নিজস্ব এনক্রিপশন স্তর দিয়ে ঢেকে রাখে যেন অন্যান্য টর নোডগুলোও এটি পড়তে না পারে। ফলে সার্ফিং খুব সুরক্ষিত থাকে।

টর ব্রাউজার দিয়ে কি আমি সব ওয়েব পেজ অ্যাক্সেস করতে পারি?

তথাকথিত অনিয়ন সেবাসহ বিশেষ টর ওয়েবসাইট রয়েছে। ডয়চে ভেলেও এমন একটি সেবা দিয়ে থাকে৷ এই সেবাগুলো খুব নিরাপদ। আপনি টর ব্রাউজার দিয়ে সব সাধারণ ওয়েবসাইটও অ্যাক্সেস করতে পারেন। তবে এমন ক্ষেত্রে টর নেটওয়ার্ক থেকে বেরিয়ে যেতে হয় এবং বেনামী ব্যবহারের সুবিধাও কিছুটা সীমিত হয়ে পড়ে। তবে যে ওয়েবসাইটে বিচরণ করছেন, তার অপারেটর আপনার আইপি অ্যাড্রেস বা আপনার ব্রাউজারের কোনো স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য শনাক্ত করতে পারে না, কারণ টর এই তথ্য আড়াল করে।

তো, আমি কে না জানলেও আমি কী করছি তা কি আপনি জানতে পারেন?

সেন্সরশিপ কর্তৃপক্ষ মূলত ইন্টারনেট ট্র্যাফিকের গতিবিধি শনাক্ত করতে পারে, তবে এখান থেকে কোনো তথ্য সংগ্রহ করতে পারে না। এজন্যই টরের বিকাশ হয়েছে। সেন্সরশিপ এড়াতে টর তথাকথিত “প্লাগেবল ট্রান্সপোর্ট” (ব্লক এড়ানোর উপযোগী টুল) তৈরি করেছে। এটি ইন্টারনেট ট্র্যাফিককে সম্পূর্ণ ভিন্নরূপে তুলে ধরে। যেমন, কেউ যদি ওয়েবসাইট ব্রাউজ করে, তবে এটি একটি ভিডিও কনফারেন্স, সাধারণ ইমেইল ট্র্যাফিক বা অন্য কিছুর মতো দেখিয়ে থাকে। এটি সব সময় আশেপাশের চিত্র বদলে দেয়। এটি সেন্সরশিপ কর্তৃপক্ষের জন্য ব্রাউজিং প্রক্রিয়া অনুসরণ করা আরও কঠিন করে তোলে।

সেন্সরশিপ কর্তৃপক্ষ কি প্লাগেবল ট্রান্সপোর্টও পাশ কাটাতে পারে?

কোনো প্লাগেবল ট্রান্সপোর্টের আড়ালে টর ট্রাফিকের ব্যবহার নিয়ে যদি সেন্সরশিপ কর্তৃপক্ষের সন্দেহ হয়, তাহলে সার্ভারের গতিবিধি পর্যবেক্ষণে তারা নিজেদের ট্রাফিক পাঠাতে পারে। ট্র্যাফিক যদি ভিডিও কনফারেন্সের ছদ্মবেশে থাকে, তবে সার্ভারটি ভিডিও কনফারেন্স সার্ভারের মতো আচরণ করছে কিনা, তারা তা দেখতে পাবে। কারণ সার্ভার তখন ভিন্নভাবে সাড়া দেয়, তখন, হয়ত কর্তৃপক্ষ আপনার সংযোগ বিচ্ছিন্ন করবে।

সেন্সরশিপ আক্রান্ত একটি দেশ থেকে আমি কীভাবে টর নেটওয়ার্কে ঢুকতে পারি?

ইন্টারনেট সেন্সরশিপের শিকার দেশগুলোর বাসিন্দাদের জন্য “ব্রিজ” (সেন্সরশিপ এড়ানো ও ব্লক হওয়া সাইট ব্যবহারের সুবিধা) প্রয়োজন হয়। এটি সাধারণত কর্তৃপক্ষের ব্লক করা টর নেটওয়ার্কে পরিচিত এন্ট্রি নোডে (ব্যবহারকারীকে বেনামী ও গোপনীয়তা সুবিধা দেয়) প্রবেশের সুবিধা দেয়। নিজেদের ডিভাইসকে একটি ভার্চুয়াল এন্ট্রি পয়েন্টে পরিণত করে প্রতিটি টর ব্যবহারকারী একটি ব্রিজ সরবরাহ করতে পারে। তাই মুক্ত ইন্টারনেট সুবিধা আছে, এমন দেশের যত বেশি মানুষ এটি ব্যবহার করবে, ইন্টারনেট সেন্সরশিপের শিকার দেশের তত বেশি মানুষের টর নেটওয়ার্ক ব্যবহারের সম্ভাবনা বাড়বে।

টর ব্যবহার করতে চাইলে আমার করণীয় কী?

এটি খুবই সহজ: টর প্রজেক্টের ওয়েবসাইটে প্রতিটি অপারেটিং সিস্টেমের উপযোগী ফায়ারফক্স-ভিত্তিক টর ব্রাউজার ডাউনলোড করা যায়। তারপর ব্রাউজারটি সাধারণ ব্রাউজারের মতো ব্যবহার করা যায়। পার্থক্য কেবল, ব্যবহারকারী বেনামী হয়ে থাকে।

সেন্সরশিপ আক্রান্ত দেশে বসে আমার কোন বিষয়গুলো বিবেচনা করতে হবে?

সেন্সরশিপ এড়াতে টর ব্রাউজারে সঠিক সেটিংস তৈরি করা জরুরি। দুর্ভাগ্যবশত, ফায়ারফক্স ব্রাউজারে সেটিংস খুঁজে পাওয়া কিছুটা কঠিন। সেটিংসে একটি বিশেষ টর এলাকা রয়েছে। টর ইনস্টল করার সময় ব্রাউজার একবার জানতে চায় যে আপনি সেন্সরশিপ আক্রান্ত কোনো দেশে বাস করেন কিনা। আপনি তা নিশ্চিত করলে প্লাগেবল ট্রান্সপোর্ট স্বয়ংক্রিয়ভাবে লোড হয়।

এখনকার টর ব্রাউজার সেটিংসে প্লাগেবল ট্রান্সপোর্টও ডাউনলোড করা যায়। ব্রিজগুলোও লোড হয়; টর ব্রাউজার চলমান ব্রিজগুলোকেই সার্চ করে। আপনি যেখানে প্লাগেবল ট্রান্সপোর্টও সেট করেন, সেখানে স্বয়ংক্রিয়ভাবে পাওয়া নতুন ব্রিজগুলোর সেটিংস শনাক্ত করা যায়: প্রথম ব্রিজ কাজ না করলে ব্রাউজারটি দ্বিতীয় ব্রিজে কাজ করে আর এভাবেই চলতে থাকে।

মুক্ত দেশের ব্যবহারকারী হিসেবে আমি কীভাবে সেন্সরশিপ আক্রান্ত দেশের জনসাধারণের পাশে দাঁড়াতে পারি?

সেন্সরশিপমুক্ত কোনো দেশে বাস করলে টর আপনাকে জিজ্ঞাসা করবে যে আপনি একটি ব্রিজ সরবরাহ করতে চান কিনা। এর ফলে আপনার ইন্টারনেটের গতি কিছুটা হ্রাস পেলেও এখনকার দ্রুত ইন্টারনেট সংযোগে এটি সম্ভবত তেমন একটা সমস্যা নয়।

টর বেআইনি কার্যকলাপের জায়গা নয়, বরং বৈধ স্বার্থ নিয়ে যারা বেনামে কাজ করতে চায়, তাদের জন্য একটি প্রোটোকল।

ব্রিজ সরবরাহের জন্য আছে ‘স্নোফ্লেক’ প্রকল্প। এটি কীভাবে কাজ করে?

স্নোফ্লেক এমন একটি প্রকল্প যেখানে সাধারণ ক্রোম বা ফায়ারফক্স ব্রাউজার ব্যবহারকারী সবাই ব্রিজ সরবরাহ করতে পারে। আপনার নিজের টর নেওয়ার্কের প্রয়োজন নেই। উদ্ভাবকেরা আশা করেন, যতটা সম্ভব বেশি ব্যবহারকারী এ ধরনের ব্রিজ সরবরাহ করবেন। কেউ যতক্ষণ সার্ফিং করে ব্রিজটি ততক্ষণ সচল থাকায় প্রকল্পটিকে স্নোফ্লেক (অর্থ: তুষারকণা) বলা হয়। তারপর তুষারকণা গলে গেলে আর শনাক্ত যায় না।

টর নেটওয়ার্কে বিচরণের সময় কি আমাকে বিধিনিষেধ মেনে চলতে হবে?

এখানে সুযোগ সুবিধার ক্ষেত্রে আপনাকে কিছুটা আপোষ করতে হবে। যেমন, ডিফল্ট সেটিংয়ে জাভাস্ক্রিপ্ট আড়ালে চলে যায় আর কুকি সংরক্ষিত হয় না। অর্থাৎ ব্রাউজার কোনো পাসওয়ার্ড সংরক্ষণ করে না এবং আগে থেকে কোনো ফর্ম পূরণ করে না।

এছাড়া এমনও ওয়েবসাইট বা পুরো অবকাঠামো অপারেটর আছেন, যারা টর নেটওয়ার্কে কোনো ট্রাফিক চায় না, কারণ তাদের আশঙ্কা, এটি বিপজ্জনক বা হুমকির কারণ হতে পারে। কিন্তু এখন এমনকি ইন্টারনেট-নির্ভর বড় বড় কোম্পানিগুলোও বুঝতে পারছে যে টরের ট্র্যাফিক খারাপ কিছু নয়।

সাইফন অ্যাপস ও কম্পিউটার প্রোগ্রাম সেবা দিয়ে থাকে। এই সেবায় একের পর এক সেন্সরশিপ এড়ানোর বিভিন্ন কৌশল প্রয়োগ করা হয়।

টর ব্যবহার করা কি বিপজ্জনক?

সার্ভারে ব্যবহারকারীর বিচরণ হয়তো শনাক্ত করা যায়। সাধারণত, ট্র্যাফিক কেবল স্থবির ও ব্লক হয়ে পড়ে। তবে এতে কর্তৃপক্ষের নজরে পড়ারও আশঙ্কা রয়েছে।

ডার্কনেট ও টরের মধ্যে পার্থক্য কী?

ডার্কনেট টর প্রোটোকল ব্যবহার করে। তবে টর ব্যবহারকারী সবাই ডার্কনেটের অংশ নয়। ফেসবুক, নিউ ইয়র্ক টাইমস, বিবিসি ও ডয়চে ভেলেও টর ব্যবহার করে। সুতরাং টর বেআইনি কার্যকলাপের জায়গা নয়, বরং বৈধ স্বার্থ নিয়ে যারা বেনামে কাজ করতে চায়, তাদের জন্য একটি প্রোটোকল।

সেন্সরশিপ এড়ানোর আরও টুল আছে, যেমন, সাইফন। এটা কি?

সাইফন কানাডার একটি বাণিজ্যিক সেবাপ্রদানকারী সংস্থা। তারা দীর্ঘদিন ধরে ডয়েচে ভেলের মতো গণমাধ্যম সংস্থার সঙ্গে কাজ করছে আর মুক্ত গণমাধ্যমের প্রয়োজনে একটি টুল তৈরি করেছে৷ সাইফন অ্যাপস ও কম্পিউটার প্রোগ্রাম সেবা দিয়ে থাকে। এই সেবায় একের পর এক সেন্সরশিপ এড়ানোর বিভিন্ন কৌশল প্রয়োগ করা হয়। বিভিন্ন সার্ভার, প্রক্সি সার্ভার, ভিপিএন প্রযুক্তি এবং আরও অনেক কিছুই ব্যবহার করা হয়। ডয়চে ভেলের মাধ্যমে সাইফোন ব্যবহার করলে আপনি ডয়চে ভেলের ওয়েবসাইট দেখতে পাবেন আর তারপর মুক্ত ইন্টারনেটে অন্য যে কোনো ওয়েবসাইটও ব্যবহার করতে পারবেন।

আমি কীভাবে সাইফন ব্যবহার করতে পারি?

সাইফোন কোনো প্রোগ্রাম বা অ্যাপের ডাউনলোড সোর্স পেতে ডয়েচে ভেলের সহায়তা নেয়। অনাকাঙ্খিত ক্ষতির পরিমাণ অনেক বেশি হওয়ার আশঙ্কায় সেন্সরশিপ কর্তৃপক্ষ বড় ক্লাউড সেবা ব্লক করতে পারে না, তাই এই সোর্সগুলো ক্লাউডে থাকে।

Signal app avoid censorship open source encryption communcations

ছবি: স্ক্রিনশট, সিগন্যাল

সুরক্ষিত মেসেজিং ব্যবস্থাও কি আছে?

অনেকেই হোয়াটসঅ্যাপ, ফেসবুকের মেসেঞ্জারের মত তাৎক্ষণিক মেসেজিং সেবা ব্যবহার করেন। কিন্তু এই সেবা ব্যবস্থার বদনাম ছড়িয়ে পড়েছে, কারণ এটি তাদের ব্যবহারকারীদের ফোন বুক পড়ে এবং এই ডেটা কোথায় যায়, তা স্পষ্ট নয়। বিনামূল্যে ব্যবহারযোগ্য অ্যাপ সিগন্যাল বেশি নিরাপদ।

সিগন্যাল দিয়ে আপনি যে কেবল নিরাপদে চ্যাট করতে পারবেন, তাই নয়; বরং ফোন কলও করতে পারবেন। আর কম্পিউটারের জন্য একটি ডেস্কটপ অ্যাপ্লিকেশন রয়েছে। অন্যান্য সেবা ব্যবস্থার বিপরীতে, সিগন্যালের সোর্স কোড উন্মুক্ত থাকে, ফলে তথ্য প্রযুক্তি নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা এর সুরক্ষা ব্যবস্থা যাচাই করতে পারেন।

এমন কোনো সার্চ ইঞ্জিন কি আছে যা গোপনীয়তা বজায় রাখে?

হ্যাঁ, গুগল বা বিং-এর মতো ব্যবহারকারীদের আইপি অ্যাড্রেস সংগ্রহ, সংরক্ষণ ও প্রক্রিয়া করে না, এমন কিছু সার্চ ইঞ্জিন আছে। এছাড়া বিরক্তিকর ব্যক্তিগত বিজ্ঞাপনও নেই। এমন সার্চ ইঞ্জিন হলো ডাকডাকগো বা স্টার্টপেজ

এই ব্রাউজারের অ্যাড-অনগুলো কী কী?

এগুলোর মধ্যে ব্রাউজিং আরও নিরাপদ করার মতো আরও টুল আছে। এমন কিছু অ্যাড-অন আছে যা কুকি, ট্র্যাকার বা জাভা-এর মতো স্ক্রিপ্ট ব্লক করে। যেমন, ইউব্লক অরিজিন বা প্রাইভেসি ব্যাজার। ব্রাউজার সেটিংস-এ গিয়ে এগুলো ইনস্টল করা হয়।

আরও পড়ুন

ইন্টারনেট শাটডাউন ও অনলাইন সেন্সরশিপ মোকাবিলায় সর্বশেষ সংযোজন

স্টেট সেন্সরশিপ: দ্য আদার ট্রাভেল ব্যান

হাও টু রিপোর্ট আন্ডার এ ডিক্টেটরশিপ: লেসনস ফ্রম নিকারাগুয়া অ্যান্ড বিয়ন্ড


ফ্যাবিয়ান শ্মিট ডয়চে ভেলের বিজ্ঞান বিভাগের একজন লেখক ও সম্পাদক। তিনি মূলত প্রযুক্তি ও উদ্ভাবন নিয়ে বেশি আগ্রহী। সমাজবিজ্ঞান ও ভাষাতত্ত্বে তাঁর প্রশিক্ষণ আছে।

The post সেন্সরশিপ এড়াতে ইন্টারনেটে যেভাবে বেনামে বিচরণ করবেন appeared first on Global Investigative Journalism Network.

Read Entire Article